![]() |
কিভাবে SEO Friendly Blog Post লিখবেন? How to write Blogger post । Blog post writing ।Computer Trainer Place |
ভূমিকা
বর্তমান সময়ে অনলাইন বিশ্বে সবচেয়ে বড় শক্তি হলো কনটেন্ট। আপনি যেকোনো ওয়েবসাইট, ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল বা ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান, সেখানে কনটেন্টই আপনার মূল ভিত্তি। তবে শুধু কনটেন্ট লিখলেই হবে না, কনটেন্টকে হতে হবে SEO Friendly। কারণ, সার্চ ইঞ্জিন যেমন Google, Bing বা Yahoo আপনার কনটেন্টকে তখনই উপরের দিকে দেখাবে যখন সেটি SEO এর নিয়ম অনুযায়ী তৈরি হবে।
এই আর্টিকেলে আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করব, কিভাবে একটি SEO Friendly Blog Post লিখতে হয়, কী কী বিষয় খেয়াল রাখতে হয়, এবং কেন SEO কনটেন্টের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ।
🔹 অধ্যায় ১: SEO কী এবং কেন দরকার?
SEO (Search Engine Optimization) হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ কনটেন্টকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য সহজবোধ্য করে তুলতে পারেন। যখন ব্যবহারকারী কোনো বিষয় সার্চ করে, তখন সার্চ ইঞ্জিন সেই কনটেন্টকে উপরের দিকে দেখায় যেটি সবচেয়ে বেশি মানসম্পন্ন, তথ্যবহুল এবং SEO Friendly।
উদাহরণ:
ধরা যাক, আপনি লিখলেন “কিভাবে ব্লগিং করে আয় করা যায়”। এখন যদি আপনি SEO ঠিকমতো করেন, তাহলে Google-এ কেউ এই টপিক সার্চ করলে আপনার লেখা প্রথম পেজে আসতে পারে। এতে ভিজিটর বাড়বে, ট্রাফিক বাড়বে এবং আয়ও বাড়বে।
👉 SEO ছাড়া ব্লগ পোস্ট মানে হলো সুন্দর কভার তৈরি করা বই, কিন্তু কেউ সেই বইয়ের নাম জানে না।
🔹 অধ্যায় ২: কীওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research)
SEO Friendly কনটেন্টের মূল চাবিকাঠি হলো কীওয়ার্ড।
-
কীওয়ার্ড কী?
কোনো ব্যবহারকারী যখন সার্চ ইঞ্জিনে কিছু টাইপ করে, সেটিই হলো কীওয়ার্ড। যেমন: “SEO Friendly Blog Post কিভাবে লিখব?” -
কীভাবে সঠিক কীওয়ার্ড খুঁজবেন?
-
কীওয়ার্ডের ধরন:
-
Short Tail Keywords: যেমন – “SEO”, “Blog” (খুব প্রতিযোগিতামূলক)
-
Long Tail Keywords: যেমন – “কিভাবে SEO Friendly Blog Post লিখবেন” (সহজে র্যাঙ্ক হয়)
-
LSI Keywords: মূল কীওয়ার্ড সম্পর্কিত অন্যান্য শব্দ। যেমন SEO → “Search Engine”, “Ranking”, “Content Optimization” ইত্যাদি।
-
👉 মনে রাখবেন, আপনার কনটেন্টে Long Tail Keywords বেশি ব্যবহার করা উচিত, কারণ এগুলোতে প্রতিযোগিতা কম এবং র্যাঙ্ক করার সুযোগ বেশি।
🔹 অধ্যায় ৩: ব্লগ পোস্টের শিরোনাম (Title)
একটি SEO Friendly Blog Post শুরু হয় শিরোনাম থেকে।
-
শিরোনামে অবশ্যই মূল কীওয়ার্ড থাকতে হবে।
-
শিরোনাম হতে হবে আকর্ষণীয়।
-
সর্বোচ্চ ৬০ ক্যারেক্টারের মধ্যে রাখতে হবে।
ভালো শিরোনামের উদাহরণ:
✅ কিভাবে SEO Friendly Blog Post লিখবেন? সম্পূর্ণ বাংলা গাইড
❌ SEO Blog
🔹 অধ্যায় ৪: Meta Description
-
মেটা ডেসক্রিপশন হলো সার্চ রেজাল্টে আপনার শিরোনামের নিচে যে ছোট্ট অংশ দেখা যায়।
-
এতে অবশ্যই কীওয়ার্ড থাকতে হবে।
-
১৫০–১৬০ ক্যারেক্টারের মধ্যে লেখা উচিত।
উদাহরণ:
“কিভাবে SEO Friendly Blog Post লিখবেন? শিখুন ধাপে ধাপে বাংলা গাইড, কীওয়ার্ড রিসার্চ, কনটেন্ট অপটিমাইজেশন ও SEO টেকনিক।”
🔹 অধ্যায় ৫: ব্লগ পোস্ট স্ট্রাকচার
একটি SEO Friendly Blog Post সবসময় সুন্দরভাবে সাজানো থাকে।
-
H1 → মূল শিরোনাম
-
H2 → প্রধান সাবহেডিং
-
H3 → ছোট ছোট বিষয়ভিত্তিক হেডিং
-
Paragraph → ছোট ও সহজ বাক্যে লেখা
👉 এতে করে পাঠক পড়তে সুবিধা পায় এবং সার্চ ইঞ্জিনও কনটেন্টকে সহজে বুঝতে পারে।
🔹 অধ্যায় ৬: কনটেন্টে কীওয়ার্ড ব্যবহার
-
কীওয়ার্ড Density (Keyword Frequency) ১%–২% এর মধ্যে রাখা ভালো।
-
প্রথম ১০০ শব্দে কীওয়ার্ড বসাতে হবে।
-
লাস্ট Paragraph-এ কীওয়ার্ড থাকতে হবে।
-
Title, Meta Description, URL, Image ALT Tag — সব জায়গায় সঠিকভাবে কীওয়ার্ড বসাতে হবে।
🔹 অধ্যায় ৭: কনটেন্টের দৈর্ঘ্য
Google সবসময় Long-form Content পছন্দ করে।
-
সাধারণত ১০০০–২০০০ শব্দ ভালো।
-
তবে যদি ৩০০০–৫০০০ শব্দ হয়, তাহলে র্যাঙ্ক করার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
-
কনটেন্ট হতে হবে Value-packed (পড়লে পাঠকের কাজে লাগবে)।
🔹 অধ্যায় ৮: ইমেজ ও মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার
একটি SEO Friendly Blog Post-এ অবশ্যই ছবি, চার্ট, ইনফোগ্রাফিক বা ভিডিও থাকতে হবে।
-
প্রতিটি ইমেজে ALT Tag দিতে হবে।
-
ইমেজ সাইজ ছোট রাখতে হবে (Page Speed-এর জন্য)।
-
ইনফোগ্রাফিক শেয়ারযোগ্য (Shareable) হলে Backlink পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
🔹 অধ্যায় ৯: User Experience (UX) এর গুরুত্ব
SEO শুধু সার্চ ইঞ্জিনের জন্য নয়, পাঠকের জন্যও। কারণ যদি ভিজিটর আপনার ব্লগে এসে আরামদায়ক অভিজ্ঞতা না পায়, তাহলে তারা খুব দ্রুত বের হয়ে যাবে। এটাকে বলে Bounce Rate।
👉 কীভাবে ভালো UX তৈরি করবেন?
-
ছোট প্যারাগ্রাফ ব্যবহার করুন – প্রতিটি Paragraph ৩–৪ লাইনের বেশি না হয়।
-
সাবহেডিং (H2, H3) ব্যবহার করুন – যাতে পাঠক বিষয়ভিত্তিক পড়তে পারে।
-
Bullets ও Numbered List ব্যবহার করুন – কনটেন্ট সহজবোধ্য হয়।
-
Call to Action (CTA) দিন – যেমন: “আরও পড়ুন”, “সাবস্ক্রাইব করুন”, “মন্তব্য করুন”।
-
মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন রাখুন – এখনকার ৭০% ভিজিটর মোবাইল থেকে পড়ে।
মনে রাখবেন:
ভালো UX মানে হলো পাঠক আপনার কনটেন্ট পড়ে সন্তুষ্ট হয়ে আরও সময় কাটাবে এবং হয়তো শেয়ার করবে। এতে আপনার SEO র্যাঙ্ক বাড়বে।
🔹 অধ্যায় ১০: Internal Linking Strategy
Internal Linking মানে হলো আপনার নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগের এক পোস্ট থেকে আরেক পোস্টে লিঙ্ক দেওয়া।
কেন জরুরি?
-
সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারে আপনার ওয়েবসাইটের স্ট্রাকচার কেমন।
-
পাঠক সহজে সম্পর্কিত কনটেন্ট খুঁজে পায়।
-
ভিজিটর ওয়েবসাইটে বেশি সময় কাটায়।
Internal Linking এর নিয়ম:
-
Anchor Text-এ কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
-
যেমন: “SEO Friendly ব্লগের জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করবেন” → (এখানে লিঙ্ক)।
-
-
প্রাসঙ্গিক কনটেন্টে লিঙ্ক দিন।
-
একটি পোস্টে অন্তত ৩–৫টি Internal Link রাখুন।
-
খুব বেশি লিঙ্ক দেবেন না, না হলে Spam মনে হবে।
🔹 অধ্যায় ১১: External Linking (Authority Links)
External Link মানে হলো আপনার ব্লগ পোস্ট থেকে বাইরের ওয়েবসাইটে লিঙ্ক দেওয়া।
কেন দরকার?
-
Google বিশ্বাস করে আপনি মানসম্মত সোর্স ব্যবহার করেছেন।
-
পাঠক আরও তথ্য পেতে পারে।
-
আপনার কনটেন্টের ভ্যালু বাড়ে।
ভালো প্র্যাকটিস:
-
কেবল Authority ওয়েবসাইটে লিঙ্ক দিন (যেমন: Wikipedia, Neil Patel, Moz)।
-
সম্পর্কিত বিষয়ে লিঙ্ক দিন।
-
NoFollow/DoFollow সঠিকভাবে ব্যবহার করুন।
🔹 অধ্যায় ১২: Backlink Strategy
Backlink হলো অন্য ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে লিঙ্ক আসা। এটি SEO এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরগুলির একটি।
কিভাবে Backlink পাবেন?
-
Guest Posting – অন্যের ব্লগে আর্টিকেল লিখে আপনার সাইটের লিঙ্ক যুক্ত করুন।
-
Infographic তৈরি করুন – সহজে শেয়ার হয়, আর এতে লিঙ্ক আসে।
-
Resource Link Building – আপনার কনটেন্টকে অন্য রিসোর্সের সাথে শেয়ার করুন।
-
Broken Link Building – ভাঙা লিঙ্ক খুঁজে বের করে আপনার লিঙ্ক প্রস্তাব করুন।
-
Social Sharing – ব্লগ পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলে অন্যরা লিঙ্ক করতে পারে।
👉 Backlink যত বেশি অথরিটি সাইট থেকে আসবে, আপনার র্যাঙ্কিং তত দ্রুত বাড়বে।
🔹 অধ্যায় ১৩: Technical SEO
SEO Friendly ব্লগ লেখার পাশাপাশি কিছু টেকনিক্যাল বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
১. Website Speed
-
Google PageSpeed Insights দিয়ে চেক করুন।
-
ইমেজ Compress করুন।
-
Hosting ভালো ব্যবহার করুন।
-
Cache Plugin ব্যবহার করুন।
২. Mobile Friendliness
-
Responsive Theme ব্যবহার করুন।
-
Google Mobile-Friendly Test দিয়ে টেস্ট করুন।
৩. SSL Certificate
৪. Sitemap এবং Robots.txt
-
XML Sitemap তৈরি করুন।
-
Robots.txt ফাইল দিয়ে সার্চ ইঞ্জিনকে নির্দেশ দিন কোন পেজ Crawl করবে।
৫. URL Structure
-
Short এবং Clean URL ব্যবহার করুন।
-
অবশ্যই কীওয়ার্ড রাখতে হবে।
-
উদাহরণ:
-
❌ yoursite.com/blog?id=123
-
✅ yoursite.com/seo-friendly-blog
-