![]() |
Free Domain DNS Setting for Blogger - Computer Trainer Place |
ব্লগার ও কাস্টম ডোমেইন: ভূমিকা
ব্লগার (Blogger বা Blogspot) হলো গুগলের একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি দ্রুত ও সহজে একটি ব্লগ শুরু করতে পারবেন। ডিফল্টভাবে ব্লগার একটি সাবডোমেইন দিয়ে দেয়, যেমন yoursite.blogspot.com। তবে একটি কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করলে ব্লগটি প্রফেশনাল দেখাবে, ব্র্যান্ডিং শক্তি বাড়বে, SEO সুবিধা বাড়বে এবং পাঠকরা সহজে মনে রাখবে আপনার সাইটের ঠিকানা।
সাবডোমেইন ব্লগার.কম থেকে কাস্টম ডোমেইন এ পরিবর্তন করার ফলে নামের স্বাধীনতা ও নিজের নাম বা ব্র্যান্ডের অধীনে কাজ করার সুযোগ মেলে।
কাস্টম ডোমেইন কেন দরকার?
কাস্টম ডোমেইন নিলে যে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়:
-
পেশাদার লুক ও বিশ্বাসযোগ্যতা: আপনার সাইট একদমই প্রফেশনাল দেখাবে, ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং জন্য ভালো।
-
SEO (Search Engine Optimization): সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কাছে স্বীকৃতি পাওয়া সহজ হয়, URL নিজের নাম হলে ভালো র্যাঙ্ক মিলতে পারে।
-
স্বল্প URL ও ব্র্যান্ডিং: মানুষ সহজে মনে রাখতে পারে যেমন
www.yourblog.com
vsyourblog.blogspot.com
। -
AdSense ও Monetization ক্ষেত্রে সুবিধা: কাস্টম ডোমেইন হলে AdSense বা অন্যান্য বিজ্ঞাপন নীতি, চুক্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনেক সময় সহজ হয়।
-
HTTPS সমর্থন ও নিরাপত্তা: গুগল ব্লগার এখন HTTPS সমর্থন করে, কাস্টম ডোমেইনেও SSL (HTTPS) পাওয়া যায় যা পাঠক ও সার্ভার উভয়ের নিরাপত্তা বাড়ায়।
কাস্টম ডোমেইন কোথা থেকে ক্রয় করবেন / কীভাবে নির্বাচন করবেন
-
সাধারণত ডোমেইন রেজিস্ট্রার প্রতিষ্ঠান যেমন GoDaddy, Namecheap, Domain.com, Google Domains ইত্যাদি থেকে ডোমেইন কেনা যায়।
-
বাংলাদেশে কিছু লোকাল রেজিস্ট্রারও আছে যারা বাংলাদেশি টাকার মাধ্যমে ও বাংলাদেশি ব্যাংক / বিকাশ / রকেট / নগদ পেমেন্ট অপশন সহ ডোমেইন অফার করে।
-
ডোমেইন এক্সটেনশন (TLD) যেমন
.com
,.net
,.org
,.bangla
,.বাংলা
,.co
ইত্যাদি হতে পারে;.com
সাধারণভাবে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য।
ডোমেইন নির্বাচন করার সময় খেয়াল রাখবেন:
-
নামটি সহজ ও সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।
-
বানান সহজ হওয়া উচিত (ভুল বানান কম হবে এমন)।
-
শব্দটি পেশাগত ও স্মরণে রাখার মতো হোক।
-
এক্সটেনশন ও মূল্য (renewal) খরচ কেমন হবে তা আগে থেকে দেখুন।
-
রেজিস্ট্রার কতটা বিশ্বস্ত, কাস্টমার সাপোর্ট কেমন — এসব বিষয় বলভূমিকা রাখে।
ব্লগার এ কাস্টম ডোমেইন সেটআপ করার ধাপসমূহ
নিচে সম্পূর্ণ ধাপগুলো দেওয়া হলো:
প্রস্তুতি কাজ
-
ডোমেইন নিবন্ধন করা হবে।
-
আপনার ব্লগার ব্লগ তৈরি করা থাকবে (বা পূর্বে থেকে তৈরি থাকলে চলবে)।
ধাপ ১: ব্লগার ড্যাশবোর্ডে গিয়ে কাস্টম ডোমেইন সেটিংস খোলা
-
ব্লগার এ লগইন করুন (Gmail অ্যাকাউন্ট দিয়ে)।
-
ব্লগ নির্বাচন করুন যেখানে কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করবেন।
-
বাম দিকের মেনুতে “Settings” অপশন এ যান।
-
“Publishing” বা “Basic” বিভাগে দেখবেন “Setup a 3rd party URL for your blog” বা “Custom domain” নামক অপশন। সেখানে আপনার কাস্টম ডোমেইনটি লিখুন — সাধারণত
www.yourdomain.com
এইভাবে। “www.” অংশটি থাকা জরুরি।
ধাপ ২: CNAME রেকর্ড ও DNS তথ্য পাওয়া
-
যখন আপনি কাস্টম ডোমেইন লিখে সেভ করবেন, ব্লগার একটি ত্রুটি দেখাবে (যেমন “We have not been able to verify your authority to this domain”)। একই সঙ্গে ব্লগার দুইটি CNAME রেকর্ড দেখাবে — একটা সাধারণ
www → ghs.google.com
এবং আরেকটা ইউনিক যা গুগল ভেরিফিকেশনের জন্য। সেই দুইটি CNAME রেকর্ড কপি করে রাখুন।
ধাপ ৩: ডোমেইন রেজিস্ট্রার বা DNS প্যানেলে লগইন করে DNS রেকর্ড কনফিগার করা
-
ডোমেইন যেখানে নিয়েছেন সেই রেজিস্ট্রারের কন্ট্রোল প্যানেলে (Domain Control Panel) লগইন করুন।
-
DNS Management / DNS Settings / Advanced DNS / Zone Editor / Name Server ইত্যাদি অপশন খুঁজে বার করুন।
-
সেখানে নিম্নলিখিত রেকর্ডগুলো সেট করুন:
-
CNAME রেকর্ড ১
-
Host / Name:
www
-
Destination / Points to / Value:
ghs.google.com
-
-
CNAME রেকর্ড ২ (বিশেষ গুগল ভেরিফিকেশন)
-
Host / Name: যেটি ব্লগার দেখায় আছে (যেমন একটা কোড — আলাদাভাবে দেওয়া হবে)
-
Destination / Value: গুগল প্রদত্ত ভেরিফিকেশন ডোমেইন (সাধারণভাবে
gv-xxxxxx.dv.googlehosted.com
)
-
-
A রেকর্ডসমূহ (optional/in some ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক, বিশেষ করে if আপনি naked domain (যেমন
yourdomain.com
রিডাইরেক্ট করতে চান))
গুগল ব্লগার যে IP গুলো ব্যবহার করে:-
DNS রেকর্ড সংরক্ষণ (Save) করুন।
-
-
ধাপ ৪: ব্লগারে ফিরে গিয়ে কাস্টম ডোমেইন সেভ করা ও রিডাইরেক্ট সেটিংস
-
DNS রেকর্ডগুলো যুক্ত এবং সেভ করার পরে ব্লগারে গিয়ে আবার সেই Custom domain সেটিংস খুলুন এবং আপনার ডোমেইনটি সেভ করুন। যদি naked domain (yourdomain.com, www ছাড়াই) r ব্যবহার করতে চান, তবে Redirect yourdomain.com to অপশনটি অন করুন।
ধাপ ৫: HTTPS/SSL সেটআপ করা
-
ব্লগার সাধারণত HTTPS availability অফার করে। একবার ডোমেইন কাজ শুরু করলে সেটিংসে গিয়ে HTTPS অন করার অপশন থাকতে পারে।
-
HTTPS সক্রিয় হলে ডোমেইন
https://www.yourdomain.com
দিয়ে নিরাপদভাবে লোড হবে।
DNS Propagation এবং অপেক্ষার সময়
-
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো DNS পরিবর্তন (CNAME, A রেকর্ড) সাধারণত প্রচারের (propagation) জন্য সময় লাগে। এটি কিছুক্ষন থেকে শুরু করে ২৪ ঘণ্টা বা কখনো কখনো ৪৮ ঘণ্টা লাগতে পারে।
-
যদি পরিবর্তন ঠিকমতো কাজ করছে না, DNS রেকর্ড সঠিকভাবে বসেছে কি না, টাইপিং ভুল হয়নি কি না পরীক্ষা করুন।
ক্লাউডফ্লেয়ার (Cloudflare) ব্যবহারের বিকল্প
কিছু ইউজার DNS প্রোভাইডার হিসেবে Cloudflare ব্যবহার করেন যাতে আরও উন্নত কন্ট্রোল, SSL, সিকিউরিটি সুবিধা পাওয়া যায়। नीचे Cloudflare ব্যবহার করে কাস্টম ডোমেইন সেটআপ-এর ধাপ:
-
Cloudflare-এ একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন ও আপনার ডোমেইন Add করুন।
-
DNS Records আমদানি হবে; পুরানো রেকর্ড গুলো ঠিক করতে হবে।
-
উপরের CNAME ও A রেকর্ডগুলো Cloudflare DNS-panel-এ যুক্ত করুন।
-
SSL/TLS সেটিংসে যান এবং “Flexible” or “Full” SSL নির্বাচন করুন (ব্লগার-এ কাজ করে এমন)।
-
প্রয়োজনে HTTP → HTTPS redirect অন করুন।
-
এরপর ব্লগারে গিয়ে কাস্টম ডোমেইন সেভ করুন।
Cloudflare ব্যবহারের সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রিডি্রেক্ট ও SSL সমস্যা কম হয়। তবে DNS TTL ও Cache খেয়াল রাখবেন।
সাধারণ সমস্যা ও তাদের সমাধান (Troubleshooting)
সমস্যা | সম্ভাব্য কারণ | সম্ভাব্য সমাধান |
---|---|---|
ডোমেইন সেভ করতে পারছেন না; ব্লগার “Unable to verify” বলছে | CNAME রেকর্ড ঠিকমতো বসেনি বা ইউনিক CNAME ভুল দেওয়া হয়েছে | DNS প্যানেলে যেকোন ভুলটি শোধরান; CNAME গুলো ব্লগার যা বলেছে ঠিক মতো কপি করুন |
naked domain (www ছাড়া) কাজ করছে না | A রেকর্ড গুলো দেওয়া হয়নি বা রিডাইরেক্ট অপশন বন্ধ আছে | চারটা A রেকর্ড সঠিকভাবে যুক্ত করুন; এবং Redirect non‑www → www অপশন অন করুন |
HTTPS ঠিকমতো কাজ করছে না (“Not Secure” দেখাচ্ছে) | SSL বিকল্প সক্রিয় হয়নি বা প্রোপাগেশন সময় লাগছে | ব্লগার সেটিংসে HTTPS Availability চালু করুন; একটু সময় দিন DNS ও certificate propagate হতে |
সার্ভার বা ব্রাউজারে পুরনো DNS ক্যাশে থাকার কারণে পুরনো ফল দেখাচ্ছে | DNS ক্যাশে বা লোকাল ব্রাউজার/ISP ক্যাশে ঝামেলা | ব্রাউজারের cache পরিষ্কার করুন; incognito/প্রাইভেট মোডে চেক করুন; কবে কখন হবে জানতে WHOIS / DNS check সার্ভিস ব্যবহার করুন |
ডোমেইন রিনিউয়াল বা রেজিস্ট্রার রেকর্ড পরিবর্তন প্রয়োজন | কখনো কখনো রেজিস্ট্রার প্যানেলে Name Server বা DNS ম্যানেজমেন্ট সীমাবদ্ধ হতে পারে | রেজিস্ট্রারের সাপোর্ট‑টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করুন; পরিবর্তন গুলো আপনি অর্থাৎ domain owner অনুমোদিত কি না দেখতে হবে |
খুঁটিনাটি বিষয় (Tips & Best Practices)
-
ডোমেইন রিনিউয়াল খরচ ও পলিসি আগে থেকেই জানুন — কিছু রেজিস্ট্রার প্রথম বছর সস্তা থাকে, পরে রিনিউয়াল অনেক বেশি হয়।
-
সাবডোমেইন হিসেবে শুধু www ব্যবহার করলে সাধারণ রিডাইরেক্ট ভালো কাজ করে। অন্য সাবডোমেইন/অন্যান্য উপ-নাম ব্যবহার করলে ভিন্ন কনফিগারেশন লাগতে পারে।
-
DNS TTL কম রাখলে পরিবর্তন দ্রুত দেখা যাবে (যদি রেজিস্ট্রার/Linux‑DNS_ALLOWANCE দেয়)।
-
SSL সার্টিফিকেট সব সময় নিয়মিত কাজ করছে কি না পরীক্ষা করবেন; Mixed content সমস্যা এড়িয়ে চলুন (যদি আপনার ব্লগে পুরনো HTTP লিংক থাকে)।
-
সার্চ কনসোল ও গুগল অ্যানালিটিকস যুক্ত করুন; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার সময় নতুন ডোমেইন ব্যবহার করবেন।
-
ব্লগার টেম্প্লেট বা থিমে কোনো স্ক্রিপ্ট বা স্টাইল লিংক HTTP থাকে কি না দেখুন — HTTPS ব্যবহার করলে mixed content ভুল দেখা দিতে পারে।
সারাংশ
সংক্ষেপে, ব্লগারে কাস্টম ডোমেইন যুক্ত করার ধাপগুলো হলো:
-
ডোমেইন কিনুন
-
ব্লগার এ গিয়ে Custom domain অপশনে যান
-
CNAME রেকর্ড ও ইউনিক ভেরিফিকেশন CNAME নিন
-
DNS প্যানেলে গিয়ে সেই রেকর্ডগুলো (CNAME + A রেকর্ড) যুক্ত করুন
-
ব্লগারে ফিরে গিয়ে ডোমেইন সেভ করুন ও রিডাইরেক্ট ও HTTPS সেটিংস অন করুন
-
কিছু সময় অপেক্ষা করুন DNS propagate হবে
No comments:
Post a Comment